News and Notice

A new website on Microbiological Lab, Department of Zoology, Rajshahi University, Bangladesh is under construction.

পোল্ট্রি ও পোল্ট্রি খামারের অর্থনৈতিক গুরুত্ব


পোল্ট্রি ও পোল্ট্রি খামারের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

পোল্ট্রি হচ্ছে মূলতঃ ঐ সমস্ত পাখি যারা মানুষের তত্বাবধানে থেকে ডিম পাড়ে ও বাচ্চা উৎপাদন করে এবং অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা প্রদান করে। আবার এভাবে বলা যায়- মাংস, ডিম, পালক, জৈব সার অথবা ওষুধ   উৎপাদনের উদ্দেশ্যে যে সমস্ত গৃহপালিত পাখিকে মানুষ লালন পালন করে তারাই হচ্ছে  পোল্ট্রি হাঁস, মুরগি, কবুতর, তিতির, কোয়েল, টার্কি এবং ময়ূর পোল্ট্রি শিল্পের অন্তর্ভুক্ত। 
Ø পোল্ট্রি খামার একটি স্থায়ী ব্যবস্থা। পোল্ট্রি খামার বলতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পোল্ট্রি প্রতিপালন করার জন্য নির্দিষ্ট স্থানকে বুঝায়


প্রোটিনের চাহিদা মিটানোঃ
Ø খাদ্য হিসেবে মাংস গ্রহনের পরিমাণ অনুযায়ী পোল্ট্রির  মাংস বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে (প্রায় 30%), প্রথম হল  শূকুরের মাংস (38%)তাই প্রোটিনের চাহিদা মিটানোর জন্য পোল্ট্রির  মাংস গুরুত্বপূর্ণ।   

বিশাল বাজারঃ
Ø বাংলাদেশে কমপক্ষে ১৫০ মিলিয়ন পোল্ট্রি ভোক্তা রয়েছে।
Ø FAO  (ফাও)তথ্যানুযায়ী, একজন মানুষকে বছরে ৫৮ কেজি মাংস এবং ৩৬৫টি ডিম খাওয়া দরকার। যেখানে বাংলাদেশের মানুষের বছরে মাংস খাওয়া পড়ে মাত্র ১১ দশমিক ২৭ কেজি (হিসাবটি পোল্ট্রি এবং অন্য উস একত্রে), আর ডিম মাত্র ৩০টি। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে একজন মানুষ বছরে ৪৭টি ডিম খেয়ে থাকে, আর ইউরোপিয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রে মাথাপিছু বছরে ২৩০টি ডিম খাওয়া হয়।


লাভজনক বিনিয়োগের সুযোগঃ
Ø পোল্ট্রি সেক্টরে বিনিয়োগ আছে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।
Ø একটি গবেষণায় দেখা গেছে পোল্ট্রি উপাদনে মোট খরচের শতকরা ৬৫ থেকে ৭৫ ভাগ খরচ হয় শুধুমাত্র খাবারের পেছনে। তাই, পরোক্ষভাবে পোল্ট্রি খাবার প্রস্তুত খাতে আরও কয়েক হাজার কটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে।

কর্মসংস্থান সৃষ্টিঃ
Ø বর্তমানে অন্তত ৬ মিলিয়ন (৬০ লাখ) মানুষ পোল্ট্রি শিল্পে কর্মরত আছে, ফলশ্রুতিতে এ শিল্পের উপর নির্ভর করে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জীবিকানির্বাহ করছে ১ কোটিরও বেশি মানুষ। তাই পোল্ট্রি শিল্প বাংলাদেশে আমিষের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে।


গবেষণার সুযোগ সৃষ্টিঃ
Ø পোল্ট্রি নিয়ে গবেষণায় আমরা পিছিয়ে থাকলেও, সারা বিশ্বে চলছে বিস্তর গবেষণা।  আমেরিকাতে ১৯২৫ সালে যেখানে পোল্ট্রির ২ পাউন্ড ওজন হতে সময় লাগতো ১১২ দিন, একবিংশ শতাব্দীতে জিনগত, চিকিসা ও ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের মাধ্যমে এখন ৭ পাউন্ড ওজন হতে সময় লাগে মাত্র ৪০ দিন।


লাভজনক ও পরিবেশ বান্ধব শিল্পঃ 
Ø আমেরিকাতে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এক পাউন্ড গরুর মাংস উপাদন করতে প্রয়োজন হয় ৪ পাউন্ড দানাদার খাবার এবং ৪ হাজার গ্যালন পানি। অন্যদিকে, এক পাউন্ড পোল্ট্রি উপাদনে প্রয়োজন হয় মাত্র ২ পাউন্ড দানাদার খাবার এবং মাত্র ৭৫০ গ্যালন পানি। এদিক দিয়ে গরুর তুলনায় পোল্ট্রি উপাদন একদিকে যেমন খরচ বাঁচায় অন্যদিকে পৃথিবীর জন্য হয় পরিবেশ বান্ধব।

পোল্ট্রি শিল্পের কিছু ঝুকিঃ
কিছু ঝুকির কারনে লাভজনক পোল্ট্রি শিল্প অলাভজনক শিল্পে পরিনত হতে পারে।  যেমন, রোগবালাই,  সরকারি নীতিনির্ধারকদের আকস্মিক সিদ্ধান্তের কারণে পোল্ট্রি খাদ্যের অতিমূল্য অথবা অভাব, চোরাই পথে ভারত থেকে ডিম আসার কারনে ডিমের স্বল্প মুল্য, রোগবালাইয়ের কারনে ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণের সরকারি কোনও ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই এসব ঝুকি থেকে দূরে থাকতে  পোল্ট্রি  খামার বন্ধ করে দিচ্ছে 
Ø বিগত ২০০৭-০৮ এর আগে বাংলাদেশে প্রায় দেড় লাখ পোল্ট্রি খামার ছিলো। গত দুই দশকে পোল্ট্রি শিল্পের প্রবৃদ্ধি ছিলো বছরে ২০% এর আশেপাশে। ২০০৭-০৮ সালে ব্যাপক আকারে বাংলাদেশে বার্ড ফ্লু দেখা দেয়, যার কারণে খামারিরা আর্থিকভাবে মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, লোকসান হয় প্রায় ৭১৪ মিলিয়ন ইউএস ডলার (প্রায় ৫ হাজার ৩শকোটি টাকা)। এ কারণে খামারের সংখ্যা কমতে থাকে। সারাদেশে বর্তমানে (২০১১ সালে) মাত্র ৭৫ হাজার থেকে ৮০ হাজার পোল্ট্রি খামার রয়েছে। অথচ গত বছর (২০১০) জুন মাসেও ছিলো ১ লাখ ১৪ হাজার এবং ডিসেম্বরে ৯৮ হাজার।
Ø ন্যাশনাল পোল্ট্রি ইন্ড্রাস্ট্রিজ প্রোটেকশন কাউন্সিলের সূত্র মতে, গত বছরের (২০১০) জুনে বাংলাদেশে প্রতিদিন পোল্ট্রি উপাদন হয়েছিল ১ দশমিক ৯৫ মিলিয়ন কেজি, যা ডিসেম্বরে কমে নেমে আসে ১ দশমিক ৭০ মিলিয়ন কেজিতে  চলতি বছরের (২০১১) মার্চে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১ দশমিক ৬০ মিলিয়ন কেজিতে।   অন্যদিকে ডিম পাদন গত বছর (২০১০) জুনে ছিল ২৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন (প্রতিদিন), যা ডিসেম্বরে ২৬ মিলিয়ন ও চলতি বছর মার্চে ২৩ দশমিক ৫ মিলিয়নে নেমেছে।