A new website on Microbiological Lab, Department of Zoology, Rajshahi University, Bangladesh is under construction.
News and Notice
ছাগল পালন খামার
ছাগল বাংলাদেশের অতি
গুরুত্বপূর্ণ পশুসম্পদ। ছাগল আমাদের দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। বাংলাদেশে
বেকার সমস্যা ও দারিদ্র্য হ্রাস মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি ও বৈদেশিক মূদ্রা
অর্জনের ক্ষেত্রে ছাগল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে। উল্লেখ্য যে এদেশের
মোট প্রায় আড়াই কোটি ছাগলের অধিকাংশই
ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের।
বাংলাদেশের কিছু সেরা জাতের ছাগলঃ
১) ব্লাক বেঙ্গল গোট- কালো রংয়ের এই ছাগল বাংলাদেশের প্রায়
সর্বত্র দেখা যায়। কালো রং সাদা ও বাদামী, খয়েরী ও সাদা রংয়ের বেঙ্গল গোট দেখা যায় ৷
এই ছাগলগুলি আকারে ছোট প্রকৃতির ৷ গড়ে ২ - ৩টি বাচ্চা একসাথে দিতে পারে এবং ১ বার বাচ্চা দেওয়ার খুব কম সময়ের মধ্যে (আট মাস অন্তর) আর একবার বাচ্চা দেয় অর্থাত ২ বছরে ৩ বার বাচ্চা দেয় ৷ ১২ – ১৪ মাসের মধ্যে এরা বাচ্চা দেয় ৷ এরা প্রতিদিন গড়ে ৪০০ গ্রাম দুধ দেয় ৷ নাম মাত্র দানা-ভূষি খেয়ে এরা ৬ মাসে প্রায় ৮ কেজি ওজন হয়৷ তবে পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ছাগলের ওজন ৩০ কেজি ও স্ত্রী ছাগলের ওজন ২০ কেজি হয় ৷
এই ছাগলগুলি আকারে ছোট প্রকৃতির ৷ গড়ে ২ - ৩টি বাচ্চা একসাথে দিতে পারে এবং ১ বার বাচ্চা দেওয়ার খুব কম সময়ের মধ্যে (আট মাস অন্তর) আর একবার বাচ্চা দেয় অর্থাত ২ বছরে ৩ বার বাচ্চা দেয় ৷ ১২ – ১৪ মাসের মধ্যে এরা বাচ্চা দেয় ৷ এরা প্রতিদিন গড়ে ৪০০ গ্রাম দুধ দেয় ৷ নাম মাত্র দানা-ভূষি খেয়ে এরা ৬ মাসে প্রায় ৮ কেজি ওজন হয়৷ তবে পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ছাগলের ওজন ৩০ কেজি ও স্ত্রী ছাগলের ওজন ২০ কেজি হয় ৷
২) যমুনাপারী- এই জাতের ছাগল যমুনা ও পদ্মা নদীর নিকটবর্তী জেলায় দেখা
যায় ৷ এই ছাগলের আকার-আকৃতি বেশ বড় ধরনের ৷ এরা মাংস ও দুধ উভয়ের জন্য ব্যবহৃত হয় ৷ সংকরায়নের কাজে অন্যান্য দেশী জাতের সহিত এদের মিলন করানো হয় ৷ পূর্ণবয়স্ক
পুরুষ ছাগল ওজনে ৫০ - ৬০ কেজি ও
স্ত্রী ছাগল ৪০ - ৫০ কেজি হয় ৷ প্রতিদিন প্রায় ১.৫ কেজি থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত দুধ দেয় ৷ ঐ দুধে প্রায় ৪
- ৫ ভাগ ফ্যাট থাকে ৷ এরা বছরে একবার বাচ্চা দেয় এবং ১টিই বাচ্চা দেয় ৷
৩) বারবারি- এই ছাগলগুলির রং সাদা ও হরিণের মতো দেহে ছোপ ছোপ দাগ থাকে ৷ পাগুলি ছোট
প্রকৃতির ৷ পরিপূর্ণ পুং ছাগলের ওজন ২৫ - ৩০ কেজি ও স্ত্রী
ছাগলের ওজন ৩৫ - ৪০ কেজি ৷ ১২ থেকে ১৫
মাসের মধ্যে এরা দুবার বাচ্চা দিতে পারে এবং
একসাথে দুটি বাচ্চা দেয় ৷ দিনে সাধারণতঃ .৮ কেজি থেকে ১.৩ কেজি দুধ দেয় ৷ দুধে ফ্যাটের
পরিমাণ প্রায় ৫ ভাগ ৷
৪) বিটল- এরা কালো, সাদা, লালচে বাদামী ও এদের মিশ্রণে হতে পারে ৷ পূর্ণ বয়স্ক
পুং ছাগলের ওজন ৫০ - ৬০ কেজি ও স্ত্রী ছাগলের ওজন ৪০ -৫০ কেজি হয় ৷ এরা সাধারণতঃ একসাথে একটি বাচ্চা দেয় তবে অনেক সময় দুটি বাচ্চাও দেয় ৷ দিনে প্রায় ১.৫
- ২ কেজি দুধ দেয় ৷
ছাগলের জাত নির্বাচন
ব্যবসায়িক ভিত্তিতে মাংসের জন্য ছাগল পালন করতে হলে বাংলার কৃষ্ণকায় জাতের ‘ব্লাক বেঙ্গল গোট’ বেশ ভাল ৷ বাজারে এই মাংসের চাহিদা,
দাম ও কদর সবচেয়ে বেশী
এবং এর চামড়ার দাম ও চাহিদাও খুব বেশী যা অন্য কোন দেশী বা বিদেশী জাতের ছাগলে নেই ৷ তাছাড়া সারা
পৃথিবীতে এই জাতের ছাগলের যথেষ্ট সুনাম
আছে ৷ তবে এরা দুধ কম দেয় ৷ দুধ ও মাংসের
জন্য ছাগল পালন করতে হলে যমুনাপুরী
জাতটি ভাল ৷ বিজ্ঞান সম্মতভাবে উন্নতমানের বাংলার কালো জাতের ছাগল চয়ন ও প্রতিপালন করতে পারলে বাংলার
মাটিতে ঐ ছাগল পালন অধিক লাভজনক হতে
পারে ৷
একনজরে ব্লাক বেঙ্গল ছাগলের প্রজনন ঘটিত বৈশিষ্ট্য-
২
|
স্ত্রী ছাগলের প্রজননের সময়
|
১৫ - ১৮ মাস
|
৩
|
ঐ সময় স্ত্রী ছাগলের ওজন
|
১০ - ৩০ কেজি
|
৪
|
পুরুষ ছাগলের প্রজননের সময়
|
১৮ - ২৪ মাস
|
৫
|
প্রজননে পুরুষ ছাগল পিছু স্ত্রী ছাগলের সংখ্যা
|
১০ - ৪০ টি
|
৬
|
গরম হয় কতদিন অন্তর
|
১৮ - ২১ দিন
|
৭
|
গরম থাকার সময়
|
২৪ - ৪৮ ঘন্টা
|
৮
|
গরম হওয়ার পর প্রজননের সময়
|
১০ - ১২ ঘন্টা
|
৯
|
কতবার প্রজনন করানো দরকার
|
১ বার, কিছুক্ষেত্রে ২ বার
|
১০
|
বাচ্চা হতে সময় লাগে
|
১৪৫ - ১৫২ দিন
|
১১
|
বাচ্চা হবার পর পুনরায় গরম হতে সময়
|
৩ মাস
|
১২
|
মায়ের কাছ থেকে বাচ্চা সরিয়ে নেওয়া হয়
|
২ মাস
|
১৩
|
একসাথে বাচ্চা দেয়
|
২ - ৩ টি
|
১৪
|
খাসীকরণ করার বয়স
|
২ মাস
|
১৫
|
মাংস বাজার করার সময়
|
৬ - ১২ মাস
|
১৬
|
বাজারজাত করার সময় ছাগলের ওজন
|
৮ - ১২ কেজি
|
১৭
|
জন্মের সময় ওজন
|
১ - ৩.৫ কেজি
|
১৯
|
প্রজননের কাল বা সময়
|
আগস্ট-নভেম্বর (শ্রাবণ-কার্ত্তিক)
|
ছাগল পালনের পদ্ধতিসমুহঃ
তিন পদ্ধতিতে ছাগল পালন করা হয়। যথাঃ ১) নিবির পদ্ধতি বা Intensive system ২) আধা-নিবির পদ্ধতি বা Semi-intensive system এবং ৩) উন্মুক্ত বা গতানুগতিক পদ্ধতি।
ছাগলের বাসস্থান
উন্মুক্ত বা গতানুগতিক পদ্ধতিতে ছাগল সারাদিন মাঠে ঘাসের জমিতে চরে বেড়ায়, খাবার সংগ্রহ করে ও
রাতে গরুর গোয়ালে, বারন্দায়, রান্নাঘরে বা বাড়ীর দাওয়াতে থাকে ৷ উন্নত পদ্ধতিতে (নিবির বা আধা-নিবির) ছাগল পালন করতে হলে
বা একসঙ্গে অনেক ছাগল পালন করতে হলে বাসস্থানটি একটু উঁচু জায়গায় হওয়া প্রয়োজন যেখানে জল জমে না ৷ আর্দ্র বা ভিজে ভাব নেই ৷ ঘর আবদ্ধ হলে চলবে না, তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে নেটে ঘেরা ফাঁকা জায়গা বা জানালা রাখতে হবে ৷ শীতের সময় ঐ
জানালায় বস্তার আবরণ দেওয়ার ও মেঝেতে খড়ের বিছানা রাখা দরকার ৷ মল-মুত্র ত্যাগের জন্য নালার ব্যবস্থা রাখা দরকার ৷ বাসস্থানের
পাশাপাশি ছাগলকে চরবার জন্য জল জমে না এমন স্থানের ব্যবস্থা করতে হবে ৷
ছাগলের ঘরের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য-
১) ঘরের মেঝে- ভুমি থেকে মেঝের উচ্চতা ৩ ফুটের বেশী হবে ৷ মেঝে শুকনো থাকবে৷ সিমেন্টের মেঝে হলে ভাল হয়৷ তবে মাটির হলে বালি-মাটির ভাল ৷
সাধারণভাবে ৭ দিন থেকে ৩ মাস বয়সের প্রতিটি ছাগলের বাচ্চার জন্য ৩ - ৫ বর্গফুট জায়গা দরকার এবং এক একটি শেডে বা ঘরে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি বাচ্চা রাখা যায় ৷ আবার ৩ মাস থেকে ৬ মাস বয়সের প্রতিটি ছাগলের জন্য ৫ থেকে ৬ বর্গফুট মেঝে প্রয়োজন সঙ্গে একটি ব্যায়ামের বা শরীর চর্চার জায়গা রাখা দরকার ৷ ৫ মাস থেকে ১২ মাস বয়সের ছাগলের জন্য প্রয়োজন ৮ বর্গফুট করে জায়গা ৷ পূর্ণবয়স্ক প্রতিটি ছাগলের জন্য জাত ও দেহের ওজন অনুসারে ৬ - ১২ বর্গফুট মেঝের জায়গা প্রয়োজন ৷ ব্লাক বেঙ্গল গোটের ক্ষেত্রে ৬ - ৭ বর্গফুট জায়গা হলে চলে কিন্তু যমুনাপুরী জাতের ছাগলের ক্ষেত্রে ঐ জায়গার পরিমাণ ১০ - ১২ বর্গফুট দরকার ৷ গাভীন হলে স্ত্রী ছাগলকে আলাদা রাখার দরকার এবং ঐ সময় থেকে বাচ্চারা দুধ ছাড়ার আগে পর্যন্ত মা ও বাচ্চার একসাথে থাকার জন্য প্রায় ১৬ বর্গফুট জায়গা দরকার ৷ প্রজননের কাজে ব্যবহৃত পুরুষ ছাগলের জন্য ও প্রায় ১৬ - ২০ বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন এবং একটি ঘরে একটি পুরুষ ছাগল রাখা প্রয়োজন ৷
সাধারণভাবে ৭ দিন থেকে ৩ মাস বয়সের প্রতিটি ছাগলের বাচ্চার জন্য ৩ - ৫ বর্গফুট জায়গা দরকার এবং এক একটি শেডে বা ঘরে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি বাচ্চা রাখা যায় ৷ আবার ৩ মাস থেকে ৬ মাস বয়সের প্রতিটি ছাগলের জন্য ৫ থেকে ৬ বর্গফুট মেঝে প্রয়োজন সঙ্গে একটি ব্যায়ামের বা শরীর চর্চার জায়গা রাখা দরকার ৷ ৫ মাস থেকে ১২ মাস বয়সের ছাগলের জন্য প্রয়োজন ৮ বর্গফুট করে জায়গা ৷ পূর্ণবয়স্ক প্রতিটি ছাগলের জন্য জাত ও দেহের ওজন অনুসারে ৬ - ১২ বর্গফুট মেঝের জায়গা প্রয়োজন ৷ ব্লাক বেঙ্গল গোটের ক্ষেত্রে ৬ - ৭ বর্গফুট জায়গা হলে চলে কিন্তু যমুনাপুরী জাতের ছাগলের ক্ষেত্রে ঐ জায়গার পরিমাণ ১০ - ১২ বর্গফুট দরকার ৷ গাভীন হলে স্ত্রী ছাগলকে আলাদা রাখার দরকার এবং ঐ সময় থেকে বাচ্চারা দুধ ছাড়ার আগে পর্যন্ত মা ও বাচ্চার একসাথে থাকার জন্য প্রায় ১৬ বর্গফুট জায়গা দরকার ৷ প্রজননের কাজে ব্যবহৃত পুরুষ ছাগলের জন্য ও প্রায় ১৬ - ২০ বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন এবং একটি ঘরে একটি পুরুষ ছাগল রাখা প্রয়োজন ৷
২) ঘরের দেওয়াল ও ছাদ- ছাগলের ঘরের উচ্চতা ৬ ফুট হওয়া প্রয়োজন ৷
৩) বাসস্থানে জলের ও খাবারের জায়গা- ঘরের মধ্যে সিমেন্টের তৈরী জলের ও খাবারের পাত্রের ব্যবস্থা করলে জল ও খাদ্যের অপচয় কম হয় ৷ তবে মজবুত ও টেকসই জলের বা খাবারের পাত্রের ব্যবহারও করা হয় ৷
৩) বাসস্থানে জলের ও খাবারের জায়গা- ঘরের মধ্যে সিমেন্টের তৈরী জলের ও খাবারের পাত্রের ব্যবস্থা করলে জল ও খাদ্যের অপচয় কম হয় ৷ তবে মজবুত ও টেকসই জলের বা খাবারের পাত্রের ব্যবহারও করা হয় ৷
৪) ছাগলের ব্যায়ামের জায়গা- ১০০ থেকে ১২৫টি ছাগলের জন্য ৬০ ফুট লম্বা ও ৪০ ফুট চওড়া ব্যায়ামের বা চরার জায়গার প্রয়োজন ৷
খাদ্য
ব্যবস্থাপনাঃ
ছাগলকে রাস্তার ধার, পুকুর পাড়, জমির আইল, পতিত জমি বা পাহাড়ের ঢালে বেঁধে বা ছেড়ে ৮-৯ ঘন্টা ঘাস খাওয়াতে পারলে খুব উপকার হবে। এ ধরনের
সুযোগ না থাকলে প্রতি ২০ কেজি ওজনের ছাগলের জন্য দৈনিক ০.৫-১ কেজি পরিমাণ কাঠাঁল, ইপিল ইপিল, ঝিকা, বাবলা পাতা অথবা এদের মিশ্রণ দেয়া
যেতে পারে। প্রতিটি ছাগলকে দৈনিক ২৫০-৩০০
গ্রাম ঘরে প্রস্তুতকৃত দানাদার খাদ্য দেয়া যেতে
পারে। ১০ কেজি দানাদার খাদ্য মিশ্রণে যেসব উপাদান থাকা প্রয়োজন তা হচ্ছেঃ চাল ভাঙ্গা ৪ কেজি, ঢেঁকি ছাঁটা চালের কুড়া ৫ কেজি, খেসারি বা অন্য কোনো ডালের ভূষি ৫০০ গ্রাম, ঝিনুকের গুড়া ২০০ গ্রাম এবং লবণ ৩০০ গ্রাম। ইউরিয়া দ্বারা প্রক্রিয়াজাত খড় ও সাইলেজ খাওয়ালে ভাল হয়।
কারণ প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে আমিষের পরিমাণ
বেশি থাকে এবং পরিপাকও ভালোভাবে হয়। জন্মের পর থেকেই ছাগল ছানাকে আঁশ
জাতীয় খাদ্য যেমন কাঁচা ঘাস ইত্যাদিতে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। দানাদার খাদ্য খাওয়ানোর পর ছাগলকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পরিষ্কার পানি খেতে দিতে হবে। বাড়ন্ত ছাগলকে দৈনিক প্রায় ১ লিটারের মতো পানি পান করা উচিত। কাঁচাঘাস কম বা এর অভাব ঘটলে ছাগলকে ইউরিয়া-চিটাগুড় মেশানো খড় নিম্নোক্ত প্রণালীতে বানিয়ে খাওয়াতে হবে।
উপকরণঃ
২-৩ ইঞ্চি মাপের কাটা খড় ১ কেজি, চিটাগুড় ২২০ গ্রাম, ইউরিয়া ৩০ গ্রাম ও পানি ৬০০ গ্রাম। এবারে পানিতে ইউরিয়া গুলে তাতে চিটাগুড় দিয়ে খড়ের সাথে মিশিয়ে সরাসরি ছাগলকে দিতে হবে। খাসীর ক্ষেত্রে তিন-চার মাস বয়সে দুধ ছাড়ানোর পর নিয়মিত সঠিকভাবে এই প্রক্রিয়াজাত খাদ্য খাওয়ালে দৈনিক ৬০ গ্রাম করে দৈহিক ওজন বাড়ে ও এক বছরের মধ্যে ১৮-২২ কেজি ওজন প্রাপ্ত হয়ে থাকে। খাসীকে দৈহিক ওজনের উপর ভিত্তি করে মোট ওজনের ৭% পর্যন্ত পাতা বা ঘাস জাতীয় খাদ্য দানাদার খাদ্যের মিশ্রণ (চাল ভাঙ্গা ৪০%, কুড়া ৫০%, ডালের ভূষি ৫%, লবণ ৩% এবং ঝিনুকের গুড়া ২%) ১০০ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ গ্রাম ও ভাতের মাড় ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত খেতে দেয়া যেতে পারে। খাসীর ওজন ২০ কেজির বেশি হয়ে গেলে এদের দেহে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই এ সময়েই এদেরকে বাজারজাত করা উচিত। ছাগল খামারের খাদ্য খরচ মোট খরচের ৬০-৭০% হওয়া আবশ্যক। বাণিজ্যিক খামারের লাভ-লোকসান তাই খাদ্য ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভরশীল।
ছাগলের রোগ ও প্রতিকার
১) কৃমি রোগ- এই রোগে ছাগল খুব বেশী আক্রান্ত হয়৷ সাধারণতঃ আসকারিস জাতীয় গোলকৃমি,আফিস্টোম, লিভার ফ্লুক, চ্যাপ্টা কৃমি দ্বারা বেশী আক্রান্ত হয় ৷ চারণ ভূমি ও বাসস্থান থেকে এই রোগ ছড়াতে
পারে ৷
লক্ষণ- এই রোগে পাতলা পায়খানা হয় ৷ ঠিকমত ওজন বৃদ্ধি হয় না, শরীর শুকিয়ে যায়, পুষ্টিকর খাবারেও বৃদ্ধি হয় না ৷ খাওয়া কমে যায়, দুর্বল হয়ে যায় ৷ মৃত্যুও হতে পারে ৷ চারণভূমিতে মলের সাথে এই কৃমি ছড়িয়ে পড়ে ৷
চিকিত্সা ব্যবস্থা- বর্ষার আগে ও পরে নিয়ম করে কৃমির ঔষধ খাওয়াতে হয় ৷ তবে কৃমির আক্রমণ যেহেতু যে কোন সময় হতে পারে তাই প্রতিমাসে একবার কৃমির ঔষধ খাওয়ানো দরকার ৷
লক্ষণ- এই রোগে পাতলা পায়খানা হয় ৷ ঠিকমত ওজন বৃদ্ধি হয় না, শরীর শুকিয়ে যায়, পুষ্টিকর খাবারেও বৃদ্ধি হয় না ৷ খাওয়া কমে যায়, দুর্বল হয়ে যায় ৷ মৃত্যুও হতে পারে ৷ চারণভূমিতে মলের সাথে এই কৃমি ছড়িয়ে পড়ে ৷
চিকিত্সা ব্যবস্থা- বর্ষার আগে ও পরে নিয়ম করে কৃমির ঔষধ খাওয়াতে হয় ৷ তবে কৃমির আক্রমণ যেহেতু যে কোন সময় হতে পারে তাই প্রতিমাসে একবার কৃমির ঔষধ খাওয়ানো দরকার ৷
২) ছাগলের ছোঁয়াচে প্লুরো নিউমোনিয়া রোগ- লক্ষণ- এই জ্বর (১০৪ ডিগ্রি - ১০৭ ডিগ্রি ) শ্বাসকষ্ট, প্রথম অবস্থায় নাক দিয়ে জল বেরোয়, পরে হলুদ হয়ে যায় ৷ কাশি হয়, দিনদিন রোগা হয়ে যায়, স্টেথো লাগালে বোঝা যায় বুকে জল জমেছে, খিদে কমে যায় ৷ এক সপ্তাহের মধ্যে ছাগলটি মারা যায় ৷
চিকিত্সা- টেট্রাসাইক্লিন ইনজেকশান বেশী মাত্রায় শিরায় করতে হবে তত্ক্ষণাত বা সালফামেজাথিম (৩৩১/৩%) হলে ৩০ মিলি একবারে ইনজেকশান দিতে হবে ৷
চিকিত্সা- টেট্রাসাইক্লিন ইনজেকশান বেশী মাত্রায় শিরায় করতে হবে তত্ক্ষণাত বা সালফামেজাথিম (৩৩১/৩%) হলে ৩০ মিলি একবারে ইনজেকশান দিতে হবে ৷
৩) গোট পক্স বা বসন্ত রোগ- এটি একটি ভাইরাস ঘটিত ছোঁয়াচে রোগ৷
লক্ষণ- এই রোগ দেখা দিলে প্রথমে জ্বর, সর্দি, চোখ ও নাক দিয়ে জল পড়ে, পালান, মুখে, কানে, ক্ষত বা জলফোস্কা দেখা যায়৷ এই জলফোস্কা অনেকসময় পেকে পুঁজ হয়৷ বাচ্চারা আক্রান্ত হলে মারা যায়৷ বড়দের দ্রুত চিকিত্সা করতে হয়৷ এই রোগের স্থায়িত্বকাল ২ - ৭ দিন৷ চিকিত্সা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা- আক্রান্ত ছাগলগুলিকে অন্যত্র সরিয়ে দিতে হবে৷ কোন আন্টিসেপটিক ক্রিম বা লোশন ক্ষতে লাগাতে হবে৷ তার আগে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড দিয়ে ক্ষত ধুয়ে দিতে হয়৷ প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা হিসাবে টিকা দিতে হবে৷ বসন্ত রোগে কোন ছাগল মারা গেলে তাকে মাঠে ও অন্য কোন খোলা জায়গায় ফেলা উচিত নয়৷ চুন মাখিয়ে গর্তে পুঁতে দিতে হয় মৃত ছাগলটিকে৷
৪) এঁসো রোগ- ভাইরাস জনিত এই রোগ ছাগলেরও দেখা যায়৷ বিশেষত বর্ষার সময় এই রোগের প্রার্দুভাব বেশী দেখা যায় এবং খুব দ্রুত অন্যান্য ছাগলের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে৷ লক্ষণ- এই রোগে মুখের ভিতরের দিকে, জিহ্বায়, ঠোঁটে, পায়ের ক্ষুরে ঘা হয়৷ এফ.এম.ডি. ভ্যাকসিন বছরে দুবার নিলে এই রোগের আক্রমণ হয় না৷
৫) পেট ফোলা বা ব্লোট- অনেক সময় নতুন সবুজ ঘাস প্রচুর
পরিমাণে খেয়ে ফেললে পেট ফুলে যায়৷ বাঁ দিকের পেট ফুলে যায়৷ শ্বাসকষ্ট হয়৷ ছাগল ছটফট করতে থাকে৷ বেশী পেট ফুলে গেলে ছাগল মারা যায়৷ চিকিত্সা ও প্রতিকার- এক কাপ তিসির তেল খাইয়ে দিলে স্বস্তি পায়৷ তাছাড়া ব্লোটোসিল ২০ মিলি ১২ ঘন্টা
অন্তর খাওয়ালে রোগ সেরে যেতে পারে৷ তবে অত্যধিক পেট ফুলে গেলে সুঁচ ফুটিয়ে গ্যাস বের করে দিতে হয়৷ কচি সবুজ ঘাস বেশী করে খাওয়ানো ঠিক নয়, সুবাবুলের পাতাও বেশী খাওয়াতে নেই৷
তথ্যসূত্র-